ইজতিহাদ ও কিয়াসের প্রামাণ্যতাকে খুব সুন্দরভাবে সাব্যস্ত করেছেন আবু বকর রাযী রহ.। কিয়াসের প্রামাণ্যতার বিরুদ্ধে কিছু বলার কোনো সুযোগ রাখেননি তিনি। তো নন্দিত ও প্রশংসিত কিয়াস ও ইজতিহাদ করতে হয় প্রত্যেক ফকিহকেই। যা থেকে বুঝে আসে তাঁর বোধের সূক্ষ্মতা এবং জ্ঞানের গভীরতা। এজন্যই দেখবেন, ইবনে কুতায়বা রহ. নিজ গ্রন্থ ‘কিতাবুল মাআরিফে’ ফকিহদের আলোচনা এনেছেন ‘আসহাবুর রায়’ (কিয়াসকারী) শিরোনামের অধীনে। আর ফকিহদের মধ্যে গণ্য করেছেন ইমাম আউযাঈ (৮৮-১৫৭ হি.) সুফিয়ান সাওরি (১০৭-১৯৮ হি.) এবং মালিক ইবনে আনাস (৯৩-১৭৯ হি.) রহ. গণের মতো বড় বড় মুহাদ্দিসকে।
তেমনি মুহাম্মদ ইবনে হারিস খুশানি (মৃত্যু: ৩৬১ হি.) রহ.কে দেখা যায়, নিজের রচিত ‘কুযাতু কুরতুবা’ গ্রন্থে ইমাম মালিকের শাগরিদদেরকে সম্বোধন করেন ‘আসহাবুর রায়’ নামে। একই কাজ করেছেন হাফেজ আবুল ওয়ালিদ ইবনে ফারাজি (মৃত্যু: ৪০৩ হি.) তাঁর প্রণীত ‘তারিখু উলামাঈল উনদুলুস’ কিতাবে। ইরাকে আদ দা-উল উদ্বাল তথা দুরারোগ্য ব্যাধি আছে বলে একটি হাদিস রয়েছে মুআত্তা মালিকে। সেই হাদিসে আদ দা-উল উদ্বাল তথা দুরারোগ্য ব্যাধির ব্যাখ্যায় ইমাম মালেকের সূত্রে বিভিন্ন জন বলেছেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য আবু হানিফা ও তাঁর শাগরেদগণ। এই ব্যাখ্যাকে প্রত্যাখ্যান করে হাফেজ আবুল ওয়ালিদ বাজি (মৃত্যু: ৪৭৪ হি.) বলেন, আমাদের জানামতে, ইমাম মালেক কোনো আহলুর রায় (তথা ফকিহগণের)র সমালোচনা করেননি এখানে। বরং কিছু মুহাদ্দিসগণের বর্ণনাগত দিক নিয়ে সমালোচনা করেছেন তিনি। ‘ইনতিত্ত্বা’ গ্রন্থে ইবনে আব্দুল বার (মৃত্যু: ৪৬৩ হি.) বলেন, ইমাম আবু হানিফার ব্যাপারে এমন ধরনের সমালোচনা ইমাম মালিকের সূত্রে তাঁর কোনো আহলুর রায় তথা ফকিহ শাগরিদ করেননি। এভাবেই আরো বহু উলামায়ে কেরাম ফকিহগণকে অভিহিত করেছেন যে সব উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই এখানে।